Home Bangabandhu Inter University Sports Championship বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপে আলোকিত বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রাঙ্গন

বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপে আলোকিত বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রাঙ্গন

by Rudaiba Khan Aoudrika
0 comment

ক্রীড়াপ্রাঙ্গনে আজকের এই অবদানে যিনি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করেছেন তিনি হলেন স্বাধীনতার একমাত্র নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নেতৃত্বদানের পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন ক্রীড়াপ্রেমিক। ক্রীড়ার প্রতি ভালবাসা ছিল তার দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ। ব্যক্তিগতভাবে তিনি ফুটবলকে বেশি পছন্দ করতেন। তিনি দ্বিতীয় স্তরের লিগে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলতেন। অসুস্থতার কারণে নিজে খেলা চালিয়ে যেতে না পারলেও তার সন্তানদের তিনি উৎসাহ দিতেন। শেখ কামাল এবং শেখ জামাল খেলায় খুবই পারদর্শী ছিলেন,পাশাপাশি তারা ক্রীড়াপ্রাঙ্গনে অতুলনীয় প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। স্বাধীনতা অর্জনের পর তারই কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ক্রীড়াপ্রাঙ্গনে অগ্রগতি যাত্রায় এক নতুনমাত্রা সংযোজন হয়। প্রধানমন্ত্রী নিজেও একজন ক্রীড়াপ্রেমিক। ।প্রাথমিক থেকে শুরু করে তিনি বিভিন্ন পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনের পুরো দায়িত্ব তুলে দেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রণালয়ের উপর। এই সকল প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য প্রতিবছর সরকার কর্তৃকএকটি বিরাট অংকের বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়। ফলস্বরূপ বিগত ৩ বছর যাবত আয়োজিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করছে। অগ্রগতির যাত্রা বজায় থাকার কারণে প্রতি বছর অংশগ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এই বছর বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ এর তৃতীয় আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। আয়োজক হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে দেশের নামকরা ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়। ১২৫টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৭০০০ এর অধিক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল। ১২টি ইভেন্ট এর প্রায় সবগুলোতে শিক্ষার্থীদের কম বেশি অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গিয়েছে।

এই সকল ইভেন্ট এ অংশগ্রহনের ফলে মানসিক ও শারীরিক উন্নতি সাধন হচ্ছে। প্রাত্যহিক জীবনের একঘেয়েমিতা থেকে মুক্ত হয়ে মানসিক বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাচর্চার পাশাপাশি এই সকল ইভেন্টসমূহে অংশগ্রহনের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তৈরী হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের একটি বিরাট অংশ পারিবারিক অ সামাজিক সহযোগিতার অভাবে অংশগ্রহণে আগ্রহ হারাচ্ছে। বিশেষ করে অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা দক্ষতা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে এই সকল ইভেন্টসমূহে সফলতা অর্জন করছে যার ফলশ্রুতি হিসেবে দেশের গুণী কোচদের দৃষ্টিগোচর হতে পারছে। তাদের হাত ধরেই প্রতিভা বিকশিত হওয়ার পাশাপাশি সয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে এবং জাতীয় দলে অংশগ্রহনের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। ইভেন্ট এর চূড়ান্ত বিজয়ীরা সম্মান সূচক অর্থ পাচ্ছে যা তাদের ক্রীড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি করছে। আয়োজিত ইভেন্টসমূহ বাদে আর কিছু ইভেন্ট থাকলে এই আয়োজনটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠত যেমন – আর্চারি,হকি,কারাতে ইত্যাদি।

বিগত তিন বছর যাবত অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি অন্যতম এই ১৩টি ইভেন্টসমূহে ভাল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনের ফলে প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়ার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে এবং অন্যরাও অনুপ্রাণিত হচ্ছে। বিশেষ করে এই বছর বাস্কেটবল ইভেন্ট এ মেয়েরা তাদের অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছ চ্যাম্পিয়ন হয়ে । এর প্রভাবে ছেলেদের পাশা পাশি মেয়েদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক সময় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও কোচ নিয়োগ এর অভাবে এ প্রশিক্ষণের ঘাটতি লক্ষ্য করা যায় তবুও নিজের অর্থায়নে কিংবা ক্লাবসমূহের সহযোগিতার কারনে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখে চলছে। সামাজিক অবক্ষয় এর কারণে বা নৈতিকমূল্যবোধ এর অভাবে নেশায় জড়িয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা পুনরায় তাদের পূর্ববর্তী জীবনে ফিরে আসতে শুরু করছে এবং সফলতা অর্জন করছে। উদাহরণস্বরূপ কয়েকদিন আগেই এনএফএল ( নর্থ সাউথ ফুটবল লিগ) আয়োজিত ফুটবল প্রতিযোগিতায় ২৬টি ক্লাবের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছিল।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা যেমন একজন শিক্ষার্থীর নীতিগত ও মূল্যবোধ এর উন্নতিসাধন ঘটিয়ে থাকে ঠিক তেমনি খেলাধুলায় অংশগ্রহণ এর ফলে শারীরিক উন্নতি সাধন হয়ে থাকে। বর্তমান সমাজে বিশেষ করে তরুণরা এই সকল প্রতিযোগিতার আয়োজন এর কারণে প্রতিনিয়ত নিজেদের উন্নতি সাধনের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে যাতে তারা ভাল প্রস্তুতির সাথে আগামী বছরগুলতে অংশগ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠছে যা তাদের নিজেদের এবং দেশের ভবিষ্যৎ এর জন্য ভূমিকা পালন করছে। এ জন্যই বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপের মতো এমন আরও প্রতিযোগিতা প্রতিবছর আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

You may also like

Leave a Comment